ঢাকা , বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ , ২৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
হেরা ফেরি ৩-তে ফিরছেন টাবু বাশার-তিশার নতুন রোমান্সের গল্প ‘বসন্ত বৌরি’ ওজন কমাতে সার্জারি, প্রাণ গেল মেক্সিকান ইনফ্লুয়েন্সারের ‘স্কুইড গেম’ অভিনেত্রী লি জু-শিল আর নেই বিচ্ছেদের পর ফের নতুন প্রেম খুঁজছেন মালাইকা অরোরা? দেশের প্রেক্ষাগৃহে ‘বলী’ আসছে ৭ ফেব্রুয়ারি হামলার পর প্রথমবার জনসমক্ষে সাইফ আলী খান অবশেষে প্রকাশ্যে এলো চিত্রনায়িকা পপির স্বামী-সন্তানসহ ছবি সমালোচনা সহ্য না হলে উপদেষ্টা পদ ছেড়ে রাজনৈতিক দল করেন-রিজভী লালমনিরহাটে বিয়ে করে ফেরার পথে বরের মৃত্যু পুঁজি রক্ষার আন্দোলনে বিনিয়োগকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা কমাতে, একীভূতকরণে নজর দেয়ার সুপারিশ বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে আরও কমার আশঙ্কা বান্দরবান সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে কিশোরের পা বিচ্ছিন্ন ট্রেনের ধাক্কায় ট্রাকের চালক সহকারী নিহত জগন্নাথ হলে সরস্বতী পূজামণ্ডপ পরিদর্শনে দুই উপদেষ্টা রমজান মাসে গ্যাস বিদ্যুতের বড় সংকটের শঙ্কা বাংলাদেশকে সহায়তা করছে ব্রিটিশ সংস্থা তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের ধৈর্য ধরতে হবে-নাহিদ ইসলাম লোকজনকে অতিষ্ঠ করে ফেলছে তিতুমীরের শিক্ষার্থীরা-স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে আরও কমার আশঙ্কা

  • আপলোড সময় : ০৪-০২-২০২৫ ০৪:৪০:৪১ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৪-০২-২০২৫ ০৪:৪০:৪১ অপরাহ্ন
বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে আরও কমার আশঙ্কা
চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই দেশজুড়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নতুন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছে। মূল্যস্ফীতি, ডলারের বাজারে অস্থিতিশীলতা, এবং আমদানিতে প্রভাব পড়ার কারণে বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করতে নিরুৎসাহিত হয়েছেন। ব্যাংকের উচ্চ সুদহারের কারণে বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ থেকে পিছিয়ে যাচ্ছেন। এতে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি কমেছে। গ্যাস ও বিদ্যুতের সংকটের কারণে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে, যা বিনিয়োগের পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছে। জানা যায়, চলতি অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে গত অর্থবছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় নিট বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে প্রায় ৭১ শতাংশ, যা গত ১১ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নত করতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং অর্থনৈতিক নীতির স্থায়িত্ব প্রয়োজন। এই পরিস্থিতিতে, বিনিয়োগকারীরা ‘ওয়েট অ্যান্ড ওয়াচ’ নীতি গ্রহণ করেছেন এবং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। এর ফলে বিনিয়োগ আরও কমতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিক জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর সময়ে দেশে নিট সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ গত অর্থবছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় প্রায় ৭১ শতাংশ কমেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে বিদেশ থেকে সরাসরি বিনিয়োগ আসে ৯৬ কোটি ৯০ লাখ ডলার। আর এ সময় বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ৮৬ কোটি ৫০ লাখ ডলার নিয়ে গেছেন। তাতে নিট বিনিয়োগ দাঁড়ায় ১০ কোটি ৪০ লাখ ডলার। এর আগে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে বিদেশ থেকে সরাসরি বিনিয়োগ আসে ৯০ কোটি ৭০ লাখ ডলার। এ সময় আগের বিনিয়োগের অর্থ পরিশোধ হয় ৫৪ কোটি ৬০ লাখ ডলার। সে হিসাবে তখন নিট বিনিয়োগ দাঁড়ায় প্রায় ৩৬ কোটি ডলার। এতে এক বছরের ব্যবধানে বিনিয়োগ কমেছে ২৫ কোটি ৬০ লাখ ডলার বা ৭১ শতাংশ। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের শেষ প্রান্তিক এপ্রিল থেকে জুন সময়ে নিট বিনিয়োগ ছিল ২৭ কোটি ২২ লাখ ডলার। সে সময় ১০৮ কোটি ডলার দেশে এলেও আগের বিনিয়োগের ক্ষেত্রে পরিশোধ হয় ৮১ কোটি ১০ লাখ ডলার। সেই হিসাবে আগের প্রান্তিকের চেয়ে চলতি অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে নিট বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে ৬১.৭৪ শতাংশ। দেশে যে বিনিয়োগ কমছে তার চিত্র দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) তথ্যেও। বিডার তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে এক হাজার ৮৩টি ব্যবসা প্রকল্পের জন্য এক হাজার ৩৩৪ কোটি ৫১ লাখ ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব নিবন্ধন হয়েছে। পরের বছর এক হাজার ৮১টি ব্যবসা প্রকল্প নিবন্ধনের মাধ্যমে এক হাজার ২৮৮ কোটি ৩৫ লাখ ডলার বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছিল। ২০২৩ সালে আরো কমে ব্যবসার ৯৯৮টি প্রকল্পে ৮৯৭ কোটি ৮৫ লাখ ডলার হয়। আর ২০২৪ সালে ব্যবসার ৭৪২টি প্রকল্পে এক হাজার ১৬৩ কোটি ডলার বিনিয়োগ নিবন্ধন হলেও এপ্রিল-জুন প্রান্তিকেই ২৫৪টি প্রকল্পে ৬৬৬ কোটি ৮০ লাখ ডলার হয়। রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সরকার পরিবর্তনকালীন জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে তা কমে ১৮৬টি প্রকল্পে মাত্র ১৮৬ কোটি ৭১ লাখ ডলার হয়। এদিকে, বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ-বেপজা জানিয়েছে, জুলাই আন্দোলনের পর পরবর্তী পরিস্থিতিতে দেশের ইপিজেডগুলোতে বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে ২২.৩৩ শতাংশ। তবে বিনিয়োগ কমলেও এই সময়ে ইপিজেড থেকে রপ্তানি বেড়েছে ২২.৪১ শতাংশ, যেখানে ইপিজেডবহির্ভূত রপ্তানি বেড়েছে ১২.৮৪ শতাংশ। ইপিজেডের বাইরে জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে সার্বিকভাবে বৈদেশিক বিনিয়োগ কমেছে ৭১ শতাংশ। বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আবুল কালাম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান বলেন, পটপরিবর্তনের পর ছয় মাসে বাংলাদেশে সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ কমেছে ৭১ শতাংশ। তবে এটি ইপিজেডের বাইরে। ইপিজেডগুলোতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর অর্থাৎ ছয় মাসে এফডিআই কমেছে ২২.৩৩ শতাংশ। শুধু পটপরিবর্তনই নয়, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির জন্যও বিনিয়োগ কমেছে। তবে বিনিয়োগ কমলেও এই সময়ে ইপিজেড থেকে রপ্তানি বেড়েছে ২২.৪১ শতাংশ, যেখানে ইপিজেডবহির্ভূত রপ্তানি বেড়েছে ১২.৮৪ শতাংশ। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান মাশরুর রিয়াজ বলেন, গত দুই অর্থবছর ধরেই সামষ্টিক অর্থনীতির কিছু বিষয়ে সমস্যা সৃষ্টি করেছে। এই সমস্যাগুলোর মধ্যে মূল্যস্ফীতির কারণে অভ্যন্তরীণ চাহিদা কমে যাওয়া, ডলারের বাজারে অস্থিতিশীলতার কারণে মূলধন কমে যাওয়া এবং আমদানিতে প্রভাব পড়া অন্যতম। এসবের সঙ্গে সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে অভ্যুত্থান-পরবর্তী অস্থিরতা যোগ হয়। ফলে উৎপাদনে বিঘ্ন ঘটে এবং সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হয়। সব মিলিয়ে আপাতত বিনিয়োগের পরিমাণ অনেক কমে গেছে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স